করোনাভাইরাস – উপসর্গ ও প্রতিরোধ
মানুষ থেকে মানুষেই ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। COVID-19 ভাইরাসে আক্রান্ত কারও হাঁচি বা কাশির সময়ে মুখ যদি না ঢাকেন তাহলে হাঁচি-কাশির সেই ছিটেফোঁটা থেকে ওই জায়গায় উপস্থিত কারও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার অনেক সম্ভাবনা থাকে। গবেষকদের পরামর্শ, এই রোগের লক্ষণ ধরা পড়ার আগেই অন্য কারও শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে COVID-19 ভাইরাস। জ্বর দিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়, এরপরে শুকনো কাশি দেখা দিতে পারে। প্রায় এক সপ্তাহ পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। অনেক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়। প্রতি চারজনের মধ্যে অন্তত একজনের অবস্থা মারাত্মক পর্যায়ে যায় বলে মনে করা হয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে হালকা ঠান্ডা লাগা থেকে শুরু করে মৃত্যুর সব উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে। তবে এর পরিণামে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া, নিউমোনিয়া এবং মৃত্যু ঘটারও আশঙ্কা রয়েছে। এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের দুই শতাংশ মারা গেছেন, হয়তো আরও মৃত্যু হতে পারে। তাছাড়া এমন মৃত্যুও হয়ে থাকতে পারে যা চিহ্নিত হয়নি। তাই এ ভাইরাস ঠিক কতটা ভয়ংকর, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এক দশক আগে সার্স (পুরো নাম সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামে যে ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৮০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল সেটিও ছিল এক ধরনের করোনা ভাইরাস। এতে আক্রান্ত হয়েছিল ৮ হাজারের বেশি মানুষ। আর একটি ভাইরাসজনিত রোগ ছিল মিডল ইস্টার্ন রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা মার্স। ২০১২ সালে এতে মৃত্যু হয় ৮৫৮ জনের।
মধ্য চীনের উহান শহর থেকে এই রোগের সূচনা। ৩১ ডিসেম্বর এই শহরে নিউমোনিয়ার মতো একটি রোগ ছড়াতে দেখে প্রথম চীনের কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। তবে ঠিক কীভাবে এর সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারেরনি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সম্ভবত কোন প্রাণী এর উৎস ছিল। প্রাণী থেকেই প্রথমে ভাইরাসটি কোনও মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং তারপর মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়েছে। এর আগে সার্স ভাইরাসের ক্ষেত্রে প্রথমে বাদুড় এবং পরে গন্ধগোকুল থেকে মানুষের দেহে ঢোকার নজির রয়েছে। আর মার্স ভাইরাস ছড়িয়েছিল উট থেকে।
করোনাভাইরাসের উপসর্গ
করোনাভাইরাস সংক্রমণে দেহে রেসপিরেটরি (শ্বাস-প্রশ্বাস) এবং নন রেসপিরেটরি সিমটম উপসর্গ দেখা দেয়। রেসপিরেটরি সিমটম হচ্ছে ফুসফুস প্রদাহের ফলে উপসর্গ, যেমন হাঁচি, কাশি, তীব্র শ্বাস কষ্ট। নন-রেসপিরেটিরি সিমটম মানে সর্দিকাশি, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট এসব ছাড়া অন্যান্য সিমটম বা উপসর্গ। শতকরা ৮০ ভাগ করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতাল ভর্তির প্রয়োজন পড়ে না। অপরদিকে শতকরা ৫০ ভাগ করোনাভাইরাস রোগী জানতেই পারেন না তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। কারণ, ৫০ ভাগ মানুষ জানতে পারে না বা বুঝতে পারে না কারণ তাদের ক্ষেত্রে এ উপসর্গগুলো খুব একটা থাকে না। সামান্য যে উপসর্গগুলো থাকে তা হয়তো মামুলি গলা ব্যাথা, অরুচি বা ডায়রিয়া। এগুলো হলো নন-রেসপিরেটরি সিমটম বা উপসর্গ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে আরও যেসব উপসর্গের কথা জানা যাচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে:
- গলা ব্যথা
- মাথা ব্যথা
- ডায়রিয়া
- গন্ধ না পাওয়া
- মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যাওয়া
এসব উপসর্গ দেখা দিতে সাধারণত গড়ে পাঁচ দিনের মতো সময় লাগে। আবার কারো কারো দেহে এসব লক্ষণ দেখা দিতে আরো বেশি সময়ও লাগতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে সাধারণত ১৪ দিনের মধ্যেই উপসর্গ দেখা দেয়।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের উপায়
এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কোনো চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি। তবে সচেতন থাকলে ও কিছু নিয়ম মেনে চললে, এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। যেমন:
- বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করা
- বাইরে পরা ময়লা কাপড় দ্রুত ধুয়ে ফেলা
- বাইরে থেকে ফিরে সাবান–পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া
- কিছু খাওয়া কিংবা রান্না করার আগে ভালো করে হাত ধুয়ে নেয়া
- চোখ, নাক ও মুখের সংস্পর্শ থেকে যতদূর সম্ভব হাত সরিয়ে রাখা
- সর্দি-কাশি, জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি না যাওয়া
- অসুস্থ জীবজন্তু থেকে দূরে থাকা
- খামার, গোয়ালঘর কিংবা বাজারের মতো জায়গা এড়িয়ে চলা
- কোনও পশু স্পর্শ করার পর ভালোভাবে হাত ধুয়ে নেয়া
- অপুষ্টি, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ নেন কিংবা যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের বেশি সতর্ক থাকা
- রোগের উপসর্গগুলো সাধারণ ঠাণ্ডার তুলনায় বেশি মনে হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে
- ফলের রস ও পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে
- ডিম অথবা মাংস রান্নার সময় ভালো করে সেদ্ধ করে নিন
- উচ্চতাপমাত্রায় ও রোদে ভালোভাবে কাপড়, তোয়ালে, চাদর ইত্যাদি শুকিয়ে নিন
- ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের যতটা সম্ভব গণপরিবহন এড়িয়ে চলতে হবে
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বশেষ আপডেট
হুনো মিয়া। আমগো দেশে এইগিলা কইয়া কাউরে লাভ নাই। আমগো এইহানের মাইনষে হইল মাতাব্বর। এগিলার মাত্তাবরি যতদিন না কমব ততদিন কিছুই হইত না। তুমি ১০০০ বার কইতে পারবা যে মুখে শইল্লে হাত দিয়েন না, দিবই। বাসার বাইরে না যাওয়ার লেইগা যে এত রিকুয়েস্ট করল, লাভ নি হইছে কোন? এই দেশে মানুষ মরবই। কম জানি মরে এই আশা করি। পাকনাগো কোন কিছু কইয়া বুঝানির মত নাই।
এগুলা ঠিক বলছেন ভাই। আমাদের দেশের মত এত এত মাতব্বর কম দেশে আছে।
মানুষ এখনো সচেতন হয় নি। লকডাউনের কোন বালাই নাই আমাদের এলাকায়। কি যে হবে!
আল্লাহ ভরসা, দেখা যাক কী হয়…
ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ সৌরভ 🙂